গাজীপুর প্রতিনিধি :
শ্রীপুর উপজেলার গোসিংঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী আজিজুল ইসলাম ওরফে হৃদয়ের বয়স কম দেখাতে জন্ম সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আর এ কারনে আদালত মামলার বিচার কাজ শুরু করতে পারছে না বলে আদালত সূত্রে জানাযায়।
শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরবরাহ করা সনদ দু’টিতে জন্ম তারিখ, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, নিবন্ধনের তারিখ ও নিবন্ধন বহি নং ভিন্ন রয়েছে বলে জন্ম সনদ জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে মামলার বাদী গাজীপুর জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার পটকা গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে আ. ছালাম ওরফে বাবুকে রাত ১০ টার দিকে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল রাতের অন্ধকারে তিন বন্ধু জরুরী কথা আছে বলে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা চালায়। তার দুই বন্ধু মারুফ হোসেন ও মো. জুনায়েদ অপর বন্ধু আ. ছালামের দুই হাত চেপে ধরে এবং প্রধান আসামী আজিজুল ইসলাম হৃদয় ধারালো ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে। গলার কিছু অংশ কেটে রক্তাক্ত গুরুতর জখম এবং এলোপাতারী মারপিটে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। এসময় ধস্তাদস্তি করে আসামীদের হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পায়। আশপাশের লোকজন ছালামকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ওই ঘটনায় আ. ছালামের মা মোছা. হালিমা বাদী হয়ে শ্রীপুর উপজেলার দক্ষিণ পটকা গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে আজিজুল ইসলাম, আব্দুর রবের ছেলে মারুফ ও আব্দুল মান্নানের পালিত ছেলে জুনায়েদকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।
মামলায় প্রধান আসামীর বয়স ১৮ বছর উল্লেখ থাকলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযোগ পত্রের সাথে দু’টি জন্ম সনদ দাখিল এবং আসামীর বয়স ১৭ বছর দেখানোর কারণে আদালত বয়স নিশ্চিত হতে হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষার প্রতিবেদনের জন্য গাজীপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠায়।
মামলার বাদী হালিমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, মামলায় আসামীদের প্রাপ্ত বয়স উল্লেখ থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা প্রধান আসামী আজিজুল ইসলাম ও ২নং আসামী মারুফকে শিশু (অপ্রাপ্ত বয়স্ক) দেখিয়ে দু’টি জন্ম সনদ দাখিল করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে করে একদিকে যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছি আবার বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছি। চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর বিহীন দু’টি জন্ম সনদ বিতরনের কারণে তিনি গত ১৫ অক্টোবর গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে জন্ম সনদ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ইউনিয়নের পরিষদের সচিবের বিরুদ্ধে জালিয়াতির বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছি।
একই ব্যক্তির জন্ম সনদে দু’টিতে জন্ম তারিখ, জন্ম নিবন্ধন নম্বর, নিবন্ধনের তারিখ ও নিবন্ধন বহি নং ভিন্ন এবং চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরবিহীন সনদ বিতরণের বিষয়ে গোসিংঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সচিব বর্তমানে শ্রীপুরের গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত সারোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবী করেন, দু’টি জন্ম সনদ বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভুষন দাস জানান, আসামী মারুফ ও আজিজুল ইসলাম হৃদয়েরর ডাক্তারী পরীক্ষার প্রতিবেদন আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।